সাড়ে ৩ হাজার কোটি ডলারের বিনিময়ে বিবাহ বিচ্ছেদে সম্মত হয়েছেন অ্যামাজানের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও তার স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি বেজস। আর এর মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যায়বহুল বিবাহ বিচ্ছেদের রেকর্ড গড়তে চলেছেন বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী এ দম্পতি।
২৫ বছর একসঙ্গে কাঁটানোর পর গেল জানুয়ারিতে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তারা। বিবিসি জানিয়েছে, অ্যামাজনের সিইও বেজোসের হাতে এতদিন কোম্পানির ১৬.৩ শতাংশ শেয়ার ছিল, যার আর্থিকমূল্য ১৪৩ বিলিয়ন ডলার। বিচ্ছেদের চুক্তি অনুযায়ী এর ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা পাচ্ছেন ম্যাকেঞ্জি, তবে কোম্পানির বোর্ডে তার ভোটিং ক্ষমতা তিনি বেজোসের হাতে ছেঁড়ে দিচ্ছেন। ফলে অ্যামাজনে বেজোসের শেয়ার আর সম্পদের পরিমাণ কমলেও কোম্পানির ওপর তার নিয়ন্ত্রণ আগের মতই থাকছে। এছাড়া ওয়াশিংটন পোস্ট আর স্পেস ট্র্যাভেল ফার্ম ব্লু অরিজিনের শেয়ারের ভাগও বেজোসকে দিয়ে দিচ্ছেন ম্যাকেঞ্জি।
বেজোস-ম্যাকেঞ্জির সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলারের এই বিচ্ছেদ আগের সব রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়েছে। এর আগে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ডিভোর্সের রেকর্ড ছিল আর্ট ডিলার অ্যালেক উয়াইল্ডেন্সটেইন ও তার স্ত্রী জোসেলিন উয়াইল্ডেন্সটেইনের। ১৯৯৯ সালে ৩৮০ কোটি ডলারের (বর্তমান সময়ে যার মূল্য ৫৭০ কোটি ডলার) বিনিময়ে তাদের ডিভোর্স হয়। বৃহস্পতিবার এক টুইটে ম্যাকেঞ্জি লিখেছেন, ‘পরস্পরের সহযোগিতায়’ বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরে তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। চার সন্তানের বাবা-মা বেজোস আর ম্যাকেঞ্জির সংসার শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে অ্যামাজনের যাত্রা শুরুরও আগে।
সে সময় তার দুজনেই কাজ করতেন হেজ ফান্ড ডি ইতে। বেজোস অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করলে ম্যাকেঞ্জিও সেখানে যোগ দেন। তিনি ছিলেন অ্যামাজনের প্রথম কর্মীদের একজন। সেই অ্যামাজন এখন পরিণত হয়েছে বিরাট এক প্রতিষ্ঠানে। গেলবছর এই ই-কমার্স কোম্পানির বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৩২.৮ বিলিয়ন ডলার। এই অ্যামাজনই বেজোসকে ১৩৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক করেছে। এদিকে সম্প্রতি গুঞ্জন ছড়িয়েছে, ফক্স টিভির সাবেক উপস্থাপিকা লরেন সানচেজের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন বেজস জেফ। এর মধ্যেই এই ডিভোর্সের ঘোষণা নিশ্চিত করলেন ম্যাককেনজি। বিচ্ছেদের মাশুল গুণতে গিয়ে বেজোসকে এখন শীর্ষ ধনীর মুকুট হারাতে হবে। সেক্ষেত্রে হয়ত ধনীদের তালিকায় আবার শীর্ষস্থানে ফিরবেন মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।
ফোর্বস জানিয়েছে, ডিভোর্সের মাধ্যমে যে টাকার মালিক হচ্ছেন ম্যাকেঞ্জি, তাতে তিনি পরিণত হচ্ছেন বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী নারীতে। অবশ্য ওয়াশিংটন রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী তিনি যদি বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বেজোসের সম্পদের আধাআধি ভাগ চাইতেন, তাহলে শীর্ষ নারী ধনীর তালিকায় তার নাম ১ নম্বরেই থাকত।
#online