BangladeshDisasterExclusiveWorld

রাজউকের বিশেষ অনুমতিতে সর্বনাশ

Ns News Online DeskNs News Online Desk: নব্বইয়ের দশকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কামাল আতাতুর্ক এভিনিউসহ বনানী এলাকার কয়েকটি সড়কে গায়ে গা লাগিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল। দশ তলার ওপর সব ভবনে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ কোনো রেস্টুরেন্ট এবং চুলা স্থাপন করা হবে না- এমন শর্তও দেওয়া হয়েছিল। তবে বিশেষ অনুমতি নিয়ে ভবন নির্মাণ করা হলেও অন্য কোনো শর্ত ভবন মালিকরা মানেননি। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার বনানীর এফ আর টাওয়ারে চারটি রেস্টুরেন্টই এর বড় প্রমাণ।

এখানে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থাও ছিল না। আগুন লাগার পর উদ্ধার অভিযান চলাকালে ব্রিফ করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক সিদ্দিক মো. জুলফিকার আহমেদ। আগুন লাগার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনও সাংবাদিকদের জানান, এই ভবনটি নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা আরও জানান, ভবনের দু’পাশে নিয়ম অনুযায়ী খালি জায়গা না থাকায় আগুন নেভাতেও বেশি সময় লেগে যায়। আগুন লাগার পর ভবনের পাশে অগ্রণী ব্যাংকের নিচে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে খোলা হয় একটি মিডিয়া সেন্টার। সন্ধ্যায় এখানে ব্রিফিংকালে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক সিদ্দিক মো. জুলফিকার সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসারে বহুতল ভবনে অবশ্যই নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। তবে ২২ তলা ওই ভবনে এ ব্যবস্থা ছিল না। সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচটি টাওয়ার গায়ে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর অবস্থান ইকবাল সেন্টার থেকে এফ আর টাওয়ার হয়ে এবিসি টাওয়ার পর্যন্ত। কেন এভাবে ভবন নির্মাণ করা হলো তার কারণ অনুসন্ধানে রাজউকের একটি সূত্র জানায়, উন্নত দেশে কিছু বাণিজ্যিক এলাকায় গায়ে গা লাগিয়ে ভবন নির্মাণের উদাহরণ দেখিয়ে নব্বইয়ের দশকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউসহ কয়েকটি এলাকায় এভাবে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। তখন শর্ত দেওয়া হয়, দশ তলার বেশি ভবন হলে এর ভেতরে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। একই সঙ্গে ভবনের ভেতরে শুধু অফিস স্পেস ছাড়া কোনো ধরনের রেস্টুরেন্ট এবং চুলা স্থাপন করা যাবে না।

নব্বইয়ের দশকে রাজউকের সেই বিশেষ অনুমতির প্রসঙ্গ টেনে নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ স্থপতি ইকবাল হাবীব সমকালকে বলেন, যখন রাজউক এই বিশেষ অনুমতি দেয়, তখনই নগর পরিকল্পনাবিদ এবং স্থপতিরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বনানীতে এসব স্থানে বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের নির্দেশনায় বলা ছিল- অফিস স্পেস ছাড়া অন্য কোনো কিছু এখানে থাকবে না। তাহলে এই এফ আর টাওয়ারের ভেতরে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হলো কীভাবে? রাজউক এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কেন? #রাশেদ মেহেদী/

Related Articles

Back to top button